ইথিওপিয়ায় ১২ হাজার বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা হেইলি গুব্বি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতে বের হওয়া ছাইয়ের বিশাল মেঘ লোহিত সাগর পেরিয়ে ওমান ও ইয়েমেন হয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছেছে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) এ তথ্য জানিয়েছে।রোববার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই অগ্ন্যুত্পাতে হাজার হাজার ফুট উচ্চতায় ছাই ও গ্যাসের স্তম্ভ আকাশে উঠে যায়। এর ফলে ভারতের একাধিক ফ্লাইট বাতিল, বিলম্বিত ও রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। দেশটির বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত আকাশসীমা সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্ততরের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত আকাশসীমার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ৮ কিলোমিটার থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এটি স্যাটেলাইট কার্যক্রম ও ফ্লাইট অপারেশন সাময়িকভাবে ব্যাহত করবে। তবে আবহাওয়া বা দিল্লির বায়ুদূষণে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।মৃত্যুঞ্জয় আরও জানান, সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাতে ছাইয়ের প্রবাহ উত্তর ভারতে পৌঁছেছে এবং এখন তা চীনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।ছাইয়ের কারণে এয়ার ইন্ডিয়া ১১টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। ইন্ডিগো, আকাসা এয়ার, কেএলএমসহ আরও কয়েকটি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
মুম্বাই বিমানবন্দর যাত্রীদের যাত্রার আগে ফ্লাইট স্ট্যাটাস যাচাই করে নিতে বলেছে।ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) একটি বিশেষ সতর্কতা নির্দেশনা জারি করে পাইলটদের সম্ভাব্য ছাইয়ের সংঘর্ষ, ইঞ্জিনের অস্বাভাবিকতা বা কেবিনে ধোঁয়ার মতো ঘটনাগুলো তাৎক্ষণিক জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের নিকটবর্তী বিমানগুলো পরিদর্শনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
স্কাইমেট ওয়েদারের বিজ্ঞানী জিপি শর্মা জানান, অগ্ন্যুত্পাত হঠাৎ হওয়ায় ছাইয়ের সঠিক মাত্রা মাপার মতো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে দূষণের মাত্রা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।আদ্দিস আবাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আতালায় আয়েলি বলেন, হেইলি গুব্বি আগ্নেয়গিরি হাজার বছর পর সক্রিয় হওয়ায় এটি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। শব্দ ও তাপ নির্গমন অস্বাভাবিক হলেও বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি বলে তিনি জানান।হেইলি গুব্বি আগ্নেয়গিরিটি ইরতা আলের কাছে অবস্থিত, যা সক্রিয় আগ্নেয়গিরির জন্য পরিচিত অঞ্চল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন, ২০১০ সালে আইসল্যান্ডের এয়াফিয়াতলাযোকুল আগ্নেয়গিরির ছাই মেঘ ইউরোপজুড়ে বিমান চলাচলে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেটিই ছিল সবচেয়ে বড় বিমান চলাচল বিপর্যয়।ইথিওপিয়ার এই অগ্ন্যুত্পাত কতদিন চলবে এবং ছাইয়ের মেঘ কখন ছড়িয়ে যাবে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য নেই।
Mytv Online